
শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিতলিয়ায় আওয়ামীলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে উভয় পক্ষ অর্ধশতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষে অন্তত ৪০ জন আহত হয়ে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ৭টি তাজা ককটেল উদ্ধার করেছে পালং মডেল থানা পুলিশ। উভয় পক্ষে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানাগেছে।
হাসপাতালে ভর্তি আহত রোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চিতলিয়া ইউনিয়নের গাঁজার বাজার এলাকার রফিক ও আউয়ালদের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। এই ঘটনায় ৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাতে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। সেখানে পালং মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ আক্তার হোসেন উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। ৮ ডিসেম্বর বুধবার ভোরে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হারুন অর রশিদ হাওলাদারের সমর্থকরা স্থানীয় গাঁজার বাজারে গেলে বর্তমান চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুস সালাম হাওলাদারের সমর্থক মানিক হাওলাদার শতাধিক লোক নিয়ে হারুন হাওলাদারের সমর্থদের উপর হামলা চালায়। তখন উভয় পক্ষে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরিত ককটেলের আলামত ও মানিক হাওলাদারের এলাকা থেকে ৭টি তাজা ককটেল উদ্ধার করেছে। হারুন অর রশিদ হাওলাদারের পক্ষে আহত স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা এমদাদ চৌকিদার, যুবলীগ নেতা রাশেদ মাদবর ও হাসেম মাদবরকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। গুরুতর আহত জাহাঙ্গীর হাওলাদারসহ অপর আহতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মানিক হাওলাদারের পক্ষে আহত নুরুল আমি বেপারী ও জাকির হাওলাদারকেও ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। অপর আহত নুরউদ্দিন বেপারী, রতন হাওলাদার, মাসুদ চৌকিদার, মজনু চৌকিদার, সোহাগ হাওলাদার, রিপন হাওলাদারদের সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত জাহাঙ্গীর হাওলাদার বলেন, ঘটনার পরে মানিক হাওলাদারের লোকজন তাদের জিম্মি করে রাখে। হাসপাতালেও যেতে দেয়নি। পরবর্তীতে পুলিশের সহায়তায় তারা হাসপাতালে যায়। হাসপাতালের জরুরী বিভাগে গিয়েও ঢাকায় চাকুরীরত পুলিশ সদস্য জাফর তাকে ডেগার দিয়ে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে।
ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি হারুন অর রশিদ হাওলাদার বলেন, পারিবারিক বিরোধ রাজনৈতিক বিরোধে পরিনত করে মানিক হাওলাদার তাদের লোকজন নিয়ে আমার লোকদের মারধর করেছে। সেখানে অনেকে আহত হয়েছে। তিনজনকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এই বিষয়ে থানায় মাললা করেছি।
অপর পক্ষের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম হাওলাদারের সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়। তবে সে কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
মানিক হাওলাদার জানান, আমি স্থানীয় বাজারে চা খেতে গেলে আমাকে সেখানে প্রতিপক্ষের লোকেরা হামলা করে। পরবর্তীতে আমাকে উদ্ধারের উদ্দেশ্যে আমার লোকজন সেখানে গেলে তাদেরকেও মারধর করে। এ ঘটনায় আমার লোকজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
এই বিষয়ে পালং মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ মো. আক্তার হোসেন বলেন, মঙ্গলবার রাতে চিতলিয়ার গাজার বাজার এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে শুনে সেখানে যাই। পরবর্তীতে জানতে পারি রফিক ও আউয়ালদের পারিবারিক বিষয়। বিষয়টি পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য সেখানে উপস্থিত লোকদের বলে আসি। এই ঘটনা যেন রাজনৈতিক বিষয়ে রূপ না নেয়। ভোরেই শুনতে পাই সেখানে আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়েছে। তাৎক্ষণিক সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। মানিক হাওলাদারের এলাকা থেকে ৭টি তাজা ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। এই বিষয়ে হারুন অর রশিদ হাওলাদারের পক্ষ থেকে মামলা করেছে। ওই এলাকায় জাফর নামে একজন পুলিশ হেড কোয়াটারে কনেস্টবল পদে চাকুরী করে। সে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদেরকেও কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। জাফর এলাকায় আসলেই কোননা কোন একটা দুর্ঘটনা ঘটে।
দৈনিক হুংকারে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।