Saturday, 26th April, 2025

নিরাপত্তাহীনতায় খোকন মেম্বারের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী-সন্তানরা

নিরাপত্তাহীনতায় খোকন মেম্বারের  দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী-সন্তানরা
হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসারত খোকন মেম্বারের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী-সন্তানেরা। ছবি-দৈনিক হুংকার।

মজিবর রহমান (খোকন মেম্বার) শরীয়তপুর সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়ন পরিষদে দীর্ঘ সময় ধরে মেম্বার ছিলেন। পাশাপাশি শরীয়তপুর জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য, বুড়ির হাট বাজার বণিক সমিতির একাধিকবার সভাপতি ও বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিলেন এই মেম্বার। এতো পদ-পদবি নিয়ে এলাকা ও এলাকার বাহিরে দরবার শালিশীতে প্রভাব বিস্তার করতেন তিনি। সেই প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি ও নেতা বর্তমানে প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছেন। প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের দ্বারা নির্যাতিত দ্বিতীয় স্ত্রী ও সন্তানদের কোন প্রকার নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ এই প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাই নিয়মিত প্রথম স্ত্রী তার সন্তানদের নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী তার সন্তানদের নির্যাতন করেই চলেছেন।
জনাগেছে, প্রথম স্ত্রী নাসরিন আক্তারের সন্তান কিবরিয়া রহমান পাপ্পু। সে পিতার নামডাক ও প্রভাব ব্যবহার করে বখাটে বনেছে। খোকন মেম্বারের দ্বিতীয় স্ত্রী শাবানা বেগম তার মেয়ে মাহিমা মজিদ খেয়া ও ছেলে সাফায়াত হোসেন সোহান কে সুক্ষিত করার জন্য জেলা সদরে ভাড়া বাসায় থাকতেন। জেলা শহরের এসডিএস একাডেমি, শরীয়তপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও শরীয়তপুর সরকারী কলেজে পড়ালেখা করিয়েছেন মেয়ে খেয়াকে। শরীয়তপুর সরকারী কলেজ থেকে এই বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন মেয়ে খেয়া। মেয়ে খেয়ার উচ্চ শিক্ষা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে ভর্তিও করেছেন মা শাবানা। শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনেও সন্তানদের নিয়ে ঢাকার ধানমন্ডির গ্রীণ রোডে অবস্থান করেছিলেন এই মা। সেখান থেকে ফিরেই মেম্বারের প্রথম স্ত্রী-সন্তান দ্বারা পুনরায় দ্বিতীয় স্ত্রী-সন্তানরা নির্যাতিত হতে থাকেন। সর্বশেষ গত ১১ সেপ্টেম্বর রাতে প্রথম পক্ষের সন্তান দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে ঢুকে মেয়ে খেয়াকে মারধর করে। পরে খেয়াকে কুপিয়ে জখম করার জন্য দা আনতে গেলে খেয়ার মা ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। দা নিয়ে এসে ঘরের দরজা বন্ধ পেয়ে বেড়া ও দরজা কুপিয়ে ক্ষতি সাধন করেন।
খেয়ার মা শাবানা জানায়, মেম্বারের সাথে তার বিয়ে হয়েছে প্রায় ২০ বছর পূর্বে। বিয়ের পর থেকেই দেখে আসছেন মেম্বারের প্রথম স্ত্রীর সন্তানরা কোন পড়ালেখ করেনা। বখাটের মতো ঘুরে ফিরে নেশা পান করে। এই পরিবেশে সন্তানদের মানুষ করা সম্ভব না বলে বিভিন্ন জায়গায় ভাড়া থেকে সন্তানদের পড়াইতেছি। তবে তারা চায় আমার সন্তানরা যেন শিক্ষিত না হয়। তাই বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন করতেছে। বিভিন্ন সময় আমাকে ও আমার সন্তানদের মারধরতো করেই। এই বার আমার মেয়ের গলা থেকে স্বর্ণের চেইন ও আমার কান থেকে দুল নিয়ে গেছে। মেম্বার প্রতিবাদ করায় তাকেও টর্চ লাইট দিয়ে পিটিয়েছে পাপ্পু। আমার আহত মেয়ে খেয়াকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিতেছি। আমি সন্তানদের নিয়ে ওই বাড়িতে যেতে ভয় পাই। যে কোন সময় আমি ও আমার সন্তানদের নেশা খোরেরা মেরে ফেলবে।
এই বিষয়ে মজিবর রহমান (খোকন মেম্বার) দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী সন্তানদের মারপিট করা হয়নি দাবী করে বলেন, পারিবারিক ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। আজ হাসপাতাল থেকে চলে আসবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

দৈনিক হুংকারে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।