
শরীয়তপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক ও শরীয়তপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সাবেক পিপি এডভোকেট হবিবুর রহমান ও তার ভাই মনীর হোসেন মুন্সী হত্যা মামলার রায়ে ৬ জনকে মৃত্যু দন্ডাদেশ, ৪ জনকে যাবজ্জীবন ও ৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজার আদেশ দিয়েছে আদালত।
শরীয়তপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. শওকত হোসাইন ২১ মার্চ রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে দন্ডপ্রাপ্ত আসামী, রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী, আসামী পক্ষের আইনজীবী ও বাদী পক্ষের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যু দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন শাহিন কোতোয়াল, শহিদ কোতোয়াল, শফিক কোতোয়াল, শহিদ তালুকদার, সোলেমান সরদার ও মজিবর রহমান তালুকদার (ল্যাংড়া)। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী সারোয়ার হোসেন বাবুল তালুকদার, ডাবলু তালুকদার, বাবুল খান ও টোকাই রশিদ। বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও অর্থদন্ড প্রাপ্ত আসামী মন্টু তালুকদার, আসলাম সরদার ও মজনু @ জাকির হোসেন।
এই মামলার এজাহারে ৫৩ জন আসামী করা হয়। এর মধ্যে ইতোমধ্যে দুইজন মৃত্যু বরণ করেছে। অপর ৩৮ জন আসামী বেকসুর খালাস পেয়েছে।
উল্লেখ্য ২০০১ সালের ৫ অক্টোবর বিকালে নিজ বাড়িতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে এডভোকেট হাবিবুর রহমান ও তার ভাই মনির হোসেন মুন্সী নিহত হয়। সেই ঘটনায় ৫৩ জনকে আসামী করে ৬ অক্টোবর পালং মডেল থানায় মামলা করেন নিহত হাবিুর রহমানের স্ত্রী জিন্নাত রহমান। এই মামলায় ২০০৩ সালের ২৩ মার্চ অভিযোগ পত্র দাখিল করে পুলিশ। অভিযোগ পত্রের বিরুদ্ধে বাদী পক্ষের নারাজী আবেদন থাকায় আদালত পুনরায় তদন্তের আদেশ প্রদান করে। পরবর্তীতে ২০১৩ সালের ৩ অক্টোবর সম্পূরক অভিযোপত্র আদালতে দাখিল করা করা হয়। মামলার বিচার কার্য শুরু হলে বাদী পক্ষের ২৯ জন সাক্ষি সাক্ষ্য প্রদান করে। আসামী পক্ষে সাফাই সাক্ষি প্রদান করেছেন ২৫ জন। আদালতের চাহিদা মতে ডি ডাব্লিউ মূলে আরও দুই জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। দীর্ঘ ২০ বছর পরে আজ মামলার রায় ঘোষণা করেছে আদালতের বিচারক।
নিহতের পুত্র ও মামলার সাক্ষি এডভোকেট পারভেজ রহমান জন বলেন, প্রকৃত খুনীদের আড়ালে রেখে এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমি উচ্চ আদালতে যাব।
মামলার রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট মির্জা হজরত আলী বলেন, এই মামলায় ৬ জনকে মৃত্যুদন্ড, ৪ জনকে যাবজ্জীবন ও ৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও অর্থদন্ড প্রদান করেছেন। এই মামলার বাদী পক্ষ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে গেলে রাষ্ট্র পক্ষে সকল সহযোগিতা করব।
আসামী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট মাসুদুর রহমান বলেন, এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারি নাই। প্রকৃত আসামীদের আড়াল করে বাদী পক্ষ রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের লক্ষে নিরপরাধদের আসামী করেছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা খুব শীঘ্রই উচ্চ আদালতে যাব।
রায় ঘোষনার পরে নিহতের পরিবারের সদস্য সহ আত্মীয় স্বজনরা আদালতের বাহিরে শ্লোগান দিয়ে দোষীদের দ্রুত শাস্তি কার্যকরের দাবী জানান।
দৈনিক হুংকারে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।