Thursday, 26th June, 2025

শরীয়তপুরের পালং মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কর্মস্থল থেকে আত্মগোপনে

শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান ছুটি না নিয়ে ৭ দিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ঢাকার অদূরে আশুলিয়ায় ৬ জনের লাশ পোড়ানোর ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আসামী ছিলেন। গ্রেপ্তার এরাতে তিনি ২৪ এপ্রিল হতে পালং মডেল থানায় অনুপস্থিত রয়েছেন বলে ধারণা সহকর্মিদের।
গতকাল সোমবার মামলাটি আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যতালিকার দুই নম্বরে ছিল। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের ধার্য দিন ছিল সোমবার। তবে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পেছানো হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর গ্রেপ্তার হতে পারেন এমন ভেবে মাসুদুর রহমান পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে কর্মস্থলের কাউকে না জানিয়ে ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যার পর থানা থেকে পালিয়েছেন।
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপারের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোসাইরহাট সার্কেল) মো. তানভির হোসেন বলেন, মাসুদুর রহমান কোথায় আছেন তা আমরা জানিনা। তিনি জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। তিনি কোন মামলার আসামী কিনা তাও বলতে পারছি না। পুলিশ হেডকোয়াটার হতে বা কোন আদালত হতে এ সংক্রান্ত কোন নথিপত্র আমাদের কাছে আসেনি।
এামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্র জানায়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ৫ আগস্ট ঢাকার অদূরে আশুলিয়ায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ৬ জন নিহত হন। তারা হলেন সাজ্জাদ হোসেন সজল, আবদুল মান্নান, মিজানুর রহমান, তানজিল মাহমুদ সুজয়, আস-সাবুর এবং বায়েজিদ। আশুলিয়া থানার সামনেই পুলিশ ভ্যানে নিহতদের লাশ পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহীনা বেগম বাদী হয়ে আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪০ জনকে আসামী করা হয়। ওই মামলায় ২৭ নম্বর আসামী করা হয় মাসুুদুর রহমানকে। তিনি তখন আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এরপর মাসুদুর রহমানকে শরীয়তপুর জেলা পুলিশে বদলি করা হয়। তিনি গত বছর ১৫ সেপ্টেম্বর জেলা পুলিশে যোগদান করেন। তারপর শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার তাকে ১২ ডিসেম্বর সদরের পালং মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে পদায়ন করেন।
গত ২৪ এপ্রিল হতে মাসুদুর রহমান পালং মডেল থানায় আসছেন না। তিনি ছুটি নিয়েও কর্মস্থল ত্যাগ করেননি। বুধবার (৩০ এপ্রিল) পালং মডেল থানায় গিয়ে তার কক্ষটি তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখা যায়।
তারা ব্যবহৃত সরকারি ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। তার ব্যক্তিগত নম্বরে ফোন করলে তাও বন্ধ পাওয়া যায়।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, ২৪ এপ্রিল হতে পরিদর্শক মাসুদুর রহমান থানায় অনুপস্থিত। সন্ধ্যার পর আমি থানায় এসে তাকে পাইনি। তার কাছে জুরুরী ফোন এসেছে তার মা অসুস্থ্য তাকে ঢাকায় যেতে হবে অন্য সহকর্মিদের কাছে এমন বলে তিনি থানা থেকে চলে গেছেন। তিনি কোথায় আছেন তা আমরা জানি না। বিষয়টি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

দৈনিক হুংকারে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।