শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলা ও সদর উপজেলায় পৃথক দুটি ধর্ষণ মামলায় ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
১ মার্চ সোমবার বিকালে শরীয়তপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আঃ ছালাম খান এ আদেশ দেন। এ রায় ঘোষণার সময় আসামীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন নড়িয়া উপজেলার আনাখন্ড গ্রামের খালেক ছৈয়ালের ছেলে লিটু ছৈয়াল (২৯), একই উপজেলার পাঁচক গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মদ ফকিরের ছেলে রাজ্জাক ফকির (৩২), একই গ্রামের আবদুল রশিদ সরদারের ছেলে আবু সরদার ওরফে সালাম সরদার (৩৬)।
শরীয়তপুরের পালং থানায় করা আরেক মামলায় ‘নারী ও শিশু দমন আইন’ (২০০০ সংশোধিত ২০০৩) এর ৯(১) ধারায় তিন জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ০৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দন্ডিত করা হয়। পাশাপাশি একই মামলায় ‘নারী ও শিশু দমন আইন’ (২০০০ সংশোধিত ২০০৩) এর ৯(১) ৩০ ধারায় ইকবাল পাংখাদারের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমান করিতে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে বেখসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
এ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন শরীয়তপুরের সদর উপজেলার উত্তর মধ্যপারা গ্রামের লোকমান ফকিরের পুত্র ইসলাম ফকির, মৃত ছামাদ মন্ডলের পুত্র রাকিব মন্ডল, মৃত শাহালম তালুকদারের পুত্র সবুজ তালুকদার।
রায় ঘোষণার সময় আসামীরা কেউ উপস্থিত ছিলেন না। তবে বেখসুর খালাস পাওয়া ইকবাল পাংখাদার এসময় উপস্থিত ছিলেন। দন্ডপ্রাপ্ত তিন জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করা হয়েছ।
শরীয়তপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের পিপি ফিরোজ আহম্মেদ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৬ অক্টোবর শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার চান্দনী গ্রামের একটি মেয়ে তার বন্ধু মহিম ও রনি এলাকার একটি অনুষ্ঠান দেখে নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের আনাখন্ড বেইলি ব্রিজ এলাকায় ঘুরতে যান। এ সময় মহিম ও রনিকে মারধর করে লিটু ছৈয়াল (২৯), রাজ্জাক ফকির (৩২), আবু সরদার ওরফে সালাম সরদার (৩৬) ওই মেয়েটিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর লিটুর বাসায় নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে ওই মেয়েটি বাদী হয়ে নড়িয়া থানায় লিটু ছৈয়াল (২৯), রাজ্জাক ফকির (৩২), আবু সরদার ওরফে সালাম সরদারকে (৩৬) আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।
নড়িয়া থানা পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত শেষে আদালতে আসামীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে। সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দোষী সাবস্ত হওয়ায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।