
নড়িয়া উপজেলার ১০নং হাঁসের কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ইংরেজদের শাসনামলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ঐতিহ্যবাহী সেই বিদ্যালয়টি এখন চলছে ঠেলা গাড়ির আদলে টেনে-হিছরে। নানান অনিয়মের মধ্যে দিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে নজীর বিহীন।
ডি.এম. জুলহাস উদ্দিন ২০০৩ সন থেকে সেই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সহকারি শিক্ষক মোশারফ হোসেন ২০০৬ সনে, সেলিম রেজা ২০১০ সনে ও সঞ্চিতা রানী ২০১৩ সনে সেই বিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে একই বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করায় ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে সেই বিদ্যালয়ে।
বিদ্যালয় অধিক্ষেত্রের সচেতন মহলের তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৬ অক্টোবর সেই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, প্রধান শিক্ষক, সহকারি শিক্ষক ও দপ্তরীসহ ৫ জন সেই বিদ্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন। অথচ বিদ্যালয়ে উপস্থিত রয়েছেন সহকারি শিক্ষক সঞ্চিতা রানী ও মোশারফ হোসেন। তারা দুজনেই সামলাচ্ছেন বিদ্যালয়। তারা জানায়, প্রধান শিক্ষক প্রশিক্ষণে, সহকারি শিক্ষক সেলিম রেজা অসুস্থ জনিত নৈমিত্তিক ছুটিতে এবং দপ্তরী ঢাকায় গেছেন।
এলাকাবাসী জানায় সেলিম রেজা একজন আমিন (ল্যান্ড সার্ভেয়ার) সে মাঝে মধ্যেই জমি মাপের কাজে চলে যায়। ১৬ অক্টোবর তিনি জমি মাপের জন্য সদর উপজেলার শৌলপাড়া ইউনিয়নে ছিলেন। সেখানে গিয়েও সুস্থ-শাবলিল দেহে সহকারি শিক্ষক সেলিম রেজাকে জমি মাপার কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে। সেখানে উপস্থিত লোকেরা জানায় গত ৯ অক্টোবর সোমবারও তিনি সেখানে জমি মাপের দায়িত্ব পালন করেছেন।
স্থানীয়রা আরো জানায়, প্রধান শিক্ষক প্রায় দুই যুগ ধরে সেই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। স্থানীয়ভাবে সেখানে তার প্রভাব সৃষ্টি হয়েছে বলেই নানান অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়েছেন। প্রধান শিক্ষকই সেলিম রেজাকে মৌখিক ছুটি দিয়ে থাকেন।
এই বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ডি.এম. জুলহাস উদ্দিন বলেন, সেলিম রেজা অসুস্থ বলে নৈমিত্তিক ছুটি নিয়েছে। ছুটি নিয়ে সে কি করছে তা আমার দেখার বিষয় না। আপনি প্রশিক্ষণে, দপ্তরী ঢাকায় আবার সেই দিন সহকারি শিক্ষক সেলিম রেজাকে ছুটি দেওয়াটা কি আপনার কাছে অনিয়ম মনে হয়নি। এই প্রশ্নের জবাবের কোন উত্তর দিতে রাজি হননি তিনি।
তবে এই বিষয়ে জানতে চাইলে দায়িত্বপ্রাপ্ত নাড়িয়া উপজেলা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী ছানোয়ার হোসেন বলেন, সিএল ছুটি দেওয়ার দায়িত্ব প্রধান শিক্ষকের। চার জন শিক্ষকের মধ্যে প্রধান শিক্ষক উপজেলায় মিটিংয়ে ছিল। অপর ৩ জন শিক্ষক বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকবে। এটাই নিয়ম। সেই দিন অন্য শিক্ষককে ছুটি দেওয়া প্রধান শিক্ষকের ঠিক হয়নি। একই বিদ্যালয়ে ২০ বছরের অধিক সময় চাকুরি করাকে আপনি কিভাবে দেখছেন, এর উত্তরে তিনি বলেন, আমরা ৩ বছরের বেশী সময় এক উপজেলায় চাকুরি করতে পারিনা। অথচ শিক্ষকদের কোন বদলী হয়না। বিষয়টি আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করব।
দৈনিক হুংকারে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।