
“মাছ উৎপাদন বৃদ্ধি করি, সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়ি” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে ২১ জুলাই মঙ্গলবার থেকে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২০ শুরু হয়েছে। যা চলবে ২৭ জুলাই পর্যন্ত। মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে সারাদেশের ন্যায় শরীয়তপুর জেলায়ও নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে মৎস্য অধিদপ্তর।
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের প্রথম দিনে জেলা ও উপজেলায় ব্যানার, ফেস্টুনসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কসমূহ সজ্জিত করা হয়েছে। একই দিনে জেলা ও উপজেলা সমূহের দর্শনীয় স্থানে অবস্থিত ডিজিটাল ডিসপ্লেতে মৎস্য খাতে বাংলাদেশ সরকারের অবদান এবং অর্জন স্ক্রল ও টিভিসি আকারে প্রচার করা হচ্ছে।
এছাড়া সপ্তাহ ব্যাপী জেলা-উপজেলায় মাইকিং, ব্যানার, ফেস্টুনের মাধ্যমে জনসচেতনতামূলক প্রচারণা, মৎস্য খাতে বর্তমান সরকারের অগ্রগতি ও সাফল্য বিষয়ে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, মাছের ক্ষতিকর রাসায়নিক প্রয়োগ বিরোধী অভিযান, মৎস্য আইন বাস্তবায়নে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, মৎস্য চাষীদের মৎস্য চাষ বিষয়ে নিবিড় পরামর্শ প্রদান, চাষীদের মাঝে মৎস্য চাষের উপকরণ বিতরণ প্রভৃতি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে শরীয়তপুরে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২০ উদ্যাপন উপলক্ষে সদর উপজেলা পরিষদের পুকুরে পোনা মাছ অবমুক্তকরণের মাঝ দিয়ে জেলার কর্মসূচি শুভ সূচনা করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামীলী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইকবাল হোসেন অপু। জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার এস.এম. আশরাফুজ্জামান, জেলা আওয়ামীলী সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবদুর রউফ, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহাবুর রহমান শেখ, পালং মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আসলাম উদ্দিন সহ বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ ও অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু বলেন, বাংলাদেশের প্রাণীজ আমিষের অন্যতম প্রধান উৎস হলো মাছ। কৃষি নির্ভর বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে মৎস্য খাতের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়টি অনুধাবন করেই স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে এক জনসভায় ঘোষণা দিয়েছিলেন ‘মাছ হবে দ্বিতীয় প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী সম্পদ’। মৎস্য সেক্টরের গুরুত্ব উপলব্ধি করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে গণভবন লেকে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন।
মৎস্য খাতের বহুমূখী কর্মকান্ডকে অধিকতর গতিশীল করার লক্ষ্যে বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার এ সেক্টরের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সর্বপ্রথম জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের কার্যক্রম ১৯৯৩ সাল থেকে শুরু হলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর নেতৃত্বে ১৯৯৬ সাল হতে দেশব্যাপী জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদ্যাপন করা হচ্ছে।
১৯৯৮ সালে মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে উল্লেখ করেন ‘জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে মৎস্য চাষ ও সংরক্ষণ কার্যক্রমকে একটি সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করার মাধ্যমে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র বিমোচনের ক্ষেত্রে একবিংশ শতাব্দির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে জাতির জনকের সোনার বাংলা করার ক্ষেত্রে মৎস্য সপ্তাহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’
এরই ধারাবাহিকতায় প্রতি বছর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন এবং গণভবন লেকে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন। মৎস্য সেক্টরের উন্নয়নের অন্যতম নিয়ামক হলো-‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন।
দৈনিক হুংকারে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।