
শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার ১৫১ টি প্রাথমিক কিদ্যালয়ের মধ্যে ১২০টি বিদ্যালয়ে আজও শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি। তাই প্রতি বছর কলাগাছ, বাঁশ ও কাগজ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে এ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা ২১ ফেব্রুয়ারী মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে আসছে।
মাতৃভাষা আন্দোলন ও শহীদ দিবসের ৭৩ বছর আর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের ২৪ বছর পরেও স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা অনুভব করতে পারছেনা ভাষা আন্দোলনের সঠিক তাৎপর্য, ফলে নতুন প্রজন্ম শহীদদের প্রতি যথাযথো ভাবে শ্রদ্ধা জানাতে পারছে না।
উপজেলার উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের ছুরিরচর বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জোবায়েদা, হিমেল ও পরশ জানায়, আমাদের পাশের আব্বাস আলী স্কুলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পাঁকা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে পালন করে। আমাদের বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নাই, প্রতিবছর তাই আমরা স্যার ও ম্যাডামদের সহযোগিতায় কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনার বানিয়ে শ্রদ্ধা জানাই। আমরা চাই সরকার যেন আমাদের বিদ্যালয়ে একটি পাঁকা শহীদ মিনার করে দেন।
ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের ১০৩ নং দক্ষিন লাকার্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ লোকমান হোসেন বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে আজও স্থায়ী ভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করতে পারি নাই। প্রতি বছর আমরা কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরী করে শহীদ দিবস পালন করি। ২/৩ দিনের প্রচেষ্টায় শহীদ মিনার তৈরী করি। আবার অনুষ্ঠান শেষ করে ভেঙ্গে ফেলতে হয়। আমাদের এলাকা গরীব হওয়ায় স্থানীয় ভাবে শহীদ মিনার করতে পারছিনা।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস ছোবাহান মুন্সী বলেন, আমাদের উপজেলার ১৩ ইউনিয়ন ১ পৌরসভায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা মোট ১৫১টি যার মধ্যে ৩১টি বিদ্যালয়ে স্থায়ী শহীদ মিনার আছে। বাকী ১২০ টি বিদ্যালয়ে স্থায়ী শহীদ মিনার নাই। ২০২৩ সাল পর্যন্ত আমাদের উপজেলায় মাত্র ১৯টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার ছিলো। সরকারের নির্দেশনা মতে স্থানীয় ব্যক্তিগণের সহায়তায় আমরা ১২টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার তৈরী করতে সমর্থ হওয়ায় এখন ৩১টি বিদ্যালয়ে হয়েছে।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিন্দ্য মন্ডল জানান, সরকারি ভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার করার সুযোগ থাকলে আমরা উদ্যোগ নিবো। তা নাহলে স্থানীয় ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করে যদি শহীদ মিনার করা যায় সে বিষয়েও আমরা উদ্যোগ নিবো। এই বিষয়ে ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নির্দেশনা দেয়া হবে।
দৈনিক হুংকারে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।