
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। যাদের অধিকাংশই বাড়িতে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আবার অনেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় চলে যাচ্ছেন। ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার জন্য খোলা হয়নি আলাদা কোন ওয়ার্ড। এ কারণে অন্য রোগীদের সাথে রেখেই তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল সূত্র জানায়, শরীয়তপুর সদর হাসপাতালটি ১০০ শয্যার। মঙ্গলবার হাসপাতালে ভর্তি রোগী রয়েছেন ২৩৩ জন। ১০০ রোগী শয্যা পেলেও বাকি ১৩৩ জন রোগিকে মেঝে ও করিডোরে রেখে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে গত ২৪ জুন প্রথম ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হন। এ পর্যন্ত ৫৮ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। মঙ্গলবার সদর হাসপাতালে ১৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি রয়েছেন। প্রতিদিন বহি বিভাগে ৫০ হতে ৬০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। তারা কেউ কেউ বাড়িতে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ চিকিৎসার জন্য ঢাকায় চলে যাচ্ছেন।
সদর হাসপাতালের নারী ওয়ার্ড ও পুরুষ ওয়ার্ডের শয্যায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। সেখানে তাদের জন্য আলাদা কোন ব্যবস্থা রাখা হয়নি। কোন রোগীকে মশারি টাঙ্গিয়েও রাখা হচ্ছে না।
শরীয়তপুর সদরের পালং ইউনিয়নের ভুচুরা গ্রামের মনিকা আক্তার (৩৬) এক সপ্তাহ যাবৎ অসুস্থ। ৭ জুলাই সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসলে তার ডেঙ্গু সনাক্ত হয়।
মনিকা আক্তার বলেন, জ্বর না কমার কারণে খারাপ কিছু হয়েছে এমন সন্দেহ হয়। হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষা করে জানতে পারি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছি। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। এখনো পুরোপুরি সুস্থ হতে পারিনি। হাসপাতালে রোগীর অনেক চাপ থাকায় চিকিৎসক ছুটি দিয়ে দিতে চান।
সদর উপজেলার বুড়িরহাট এলাকার মৃত আজিজ সরদারের স্ত্রী মালেকা বেগম (৭৫)। ৩ জুলাই থেকে জ্বরে আক্রান্ত। স্বজনরা ৮ জুলাই সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর তার শরীরে ডেঙ্গু সনাক্ত হয়। নারী ওয়ার্ডে থেকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
মালেকা বেগম বলেন, জ্বরে শরীর অনেক দুর্বল হয়ে পরেছে। মাথা, হাত-পা ব্যাথা করছিল। জ্বর কমতেছিল না। হাসপাতালে এসে জানতে পারি ডেঙ্গু হয়েছে। আল্লাহই জানেন এখন কত দিনে সুস্থ হব।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, বহি বিভাগে প্রতিদিন ৫০ হতে ৬০ জন ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত হচ্ছেন। তারা কেউই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন না। চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছেন। অনেকে ঢাকায় যাচ্ছেন। প্রথম দিকে ডেঙ্গু সনাক্ত রোগীদের ঢাকা থেকে আসার তথ্য পেতাম। এখন যাদের সনাক্ত হচ্ছে তাদের ঢাকায় ভ্রমনের তথ্য পাওয়া যায় না।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সুমন কুমার পোদ্দার বলেন, দিন দিন শরীয়তপুরে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য এখনো আলাদা কোন ওয়ার্ড খোলা হয়নি। সাধারণ ওয়ার্ডে রেখেই তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন থাকলে দু-একদিনের মধ্যেই আলাদা একটি ওয়ার্ড খোলা হবে।। বহি বিভাগে ও আন্ত: বিভাগে ডেঙ্গু রোগীদের সঠিকভাবেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে ডেঙ্গু পরীক্ষার কিটের স্বল্পতা রয়েছে।
দৈনিক হুংকারে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।