
শরীয়তপুরের বিভিন্ন সড়কের পাশে এবং সরকারী দপ্তরের দেয়াল ঘেঁষে রাখা হতো ময়লা-আবর্জনা। সেই ময়লার স্তুপ ও আবর্জনা পরিস্কার করে ফুলের বাগান তৈরীর পরে এবার উন্মুক্ত পাঠাগারের ব্যবস্থা করলেন শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনদীপ ঘরাই। তার বাস ভবনের দেয়ালের ‘একুশ’ নাম করণ সেখানেই তৈরী হল উন্মুক্ত পাঠাগার।
৫২’র ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে একুশ দেয়ালে পাঠাগার তৈরী করে সেখানে রাখা হয়েছে ২১টি বই। পথচারীরা দাঁড়িয়ে বই পড়ার সুযোগ পাবেন ওই পাঠাগার থেকে। জানতে পারবেন ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস।
গতকাল শুক্রবার ওই উন্মুক্ত পাঠাগারের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসান ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনদীপ ঘরাই। ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে দেয়ালের নামকরণ করা হয়েছে ‘একুশ’। ওই দেয়ালেই গড়ে তোলা হয়েছে একটি উন্মুক্ত পাঠাগার।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাস ভবনের প্রধান ফটকের পাশ দিয়ে পালং বাজার সংযোগ সড়ক। সড়ক ঘেঁষে দাঁড়িয়ে রয়েছে বাস ভবনের দেয়াল। বিগত সময়ে ময়লা-আবর্জনা ফেলে দেয়ালের পাশটি দূর্গন্ধময় এলাকায় পরিণত করা হয়েছিল। মানুষের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল সড়কটি। বিষয়টি নজরে আনেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনদীপ ঘরাই। পরে তিনি পরিকল্পিত ভাবে জানুয়ারি মাস থেকে ফেলে রাখা ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। পরিচ্ছন্ন পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ার পরে দেয়ালে নতুন রং রাঙ্গিয়ে উন্মুক্ত পাঠাগার করার উদ্যোগ নেন। নির্মাণ করা হয়েছে উন্মুক্ত পাঠাগার আর সেখানে রাখা হয়েছে ২১টি বই। উন্মুক্ত পাঠাগার থেকে বই পড়ার জন্য পথচারীদের আহ্বান জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনদীপ ঘরাই বলেন, যেখানে ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধ ছিল আজ সেখানে জ্ঞানচর্চার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ পরিবর্তন আনতে উদ্যোগ গ্রহণ করি এবং এক পর্যায়ে সফল হই। আজ খুব আনন্দ লাগছে। উন্মুক্ত এ পাঠাগারে ২১ জন লেখকের বই রয়েছে। কোনো পাঠক চাইলে বাড়িতে নিয়েও বই পড়তে পারবেন। পড়া শেষে তাঁকে পাঠাগারে বই রেখে যেতে হবে। আপাতত আমি পরিচিত ও স্বজনদের সহায়তায় পাঠাগারটি চালু করেছি। জেলা প্রশাসক স্যারও উৎসাহ দিয়েছেন, সহায়তা করেছেন।
উন্মক্ত পাঠাগার তৈরীর বিষয়ে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসান বলেন, ভাষার মাসে আমার এক সহকর্মীর বাস ভবনের দেয়ালে রাস্তার পাশে উন্মুক্ত পাঠাগার নির্মাণের উদ্যোগ আমাদের অভিভূত করেছে। অন্ধকার দূর করে আলোর পথে চলতে হবে। আর আলোকিত হতে হলে বইই নিত্যদিনের সঙ্গী। এমন আলোকিত অভিযাত্রায় জেলা প্রশাসন সর্বদা পাশে থাকবে।