
শরীয়তপুর পুলিশ লাইন্সে মাহে রমজান উপলক্ষে পুলিশ অফিসার-ফোর্সদের ইফতার, রাতের খাবার ও সেহেরীতে আমূল পরিবর্তন আনলেন পুলিশ সুপার জনাব এস. এম. আশরাফুজ্জামান। এই মাসের জন্য পুলিশ লাইন্স মেসে তিন মেট্রিকটন এরফান সুপার মিনিকেট চাল ক্রয় করার নিদের্শ প্রদান করেন তিনি। যাতে পুলিশ সদস্যদের রমজান মাসে খাবারের কোন সমস্যা না হয় সেই দিকেও নজর রাখছেন পুলিশ বান্ধব এই কর্মকর্তা। তিনি নিজ তহবিল থেকে ইফতারে প্রতি পুলিশ সদস্যের জন্য একটি করে ডিম বরাদ্দ প্রদান করেছেন। এছাড়াও মেসের সদস্যদের মাসের খাবারের ম্যানুতেও অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে।
পুলিশ সুপার এস.এম. আশরাফুজ্জামান বলেন, ভালো মানের খাবার খেয়ে পুলিশ সদস্যরা সুস্থ থাকবে। সুস্থ শরীরে রোজা রাখতে পারবে। শরীর স্বাস্থ্য সুস্থ থাকলে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে উৎসাহিত হবেন তারা। এজন্যই রমজান মাসের খাবারের ম্যানুতে চিকন চালের ভাত, ভালো মানের ডাল, শাক-শবজি, ডিম, দুধ, খেজুর, মাল্টা, মাছ, মাংস সহ আরো বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবার যোগ করা হল।
রমজান মাসে পুলিশ মেসের খাবারের ম্যানুর ইফতারে- মুড়ি, ছোলা, খেজুর, মাল্টা, জিলাপী, পেয়াজু ও ডিম। রাতের খাবারে ভাত, বড় মাছ, ছোট মাছ, ডাল, মুড়িঘন্ট ও সবজি। সেহেরিতে- ভাত, গরুর মাংস, মুরগির মাংশ, আলুভর্তা, ডালভর্তা, পেঁপেভর্তা, সবজি, বড় মাছ, ছোট মাছ, দুধ ও কলা রাখা হয়েছে।
এ সম্পর্কে পুলিশ সুপার বলেন, পুলিশ সদস্যরা অত্যন্ত পরিশ্রম করে দিনরাত্রি করোনা মোকাবিলাসহ অন্যান্য ডিউটি করছে। পাশাপাশি রোজা রাখছে। এসময় তাদের ভালো মানের খাবার খাওয়া দরকার। যাতেকরে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে আমরা জেলার প্রত্যেক পুলিশ সদস্যকে উন্নত মানের পিপিই, চশমা, ৩০ পিস জিংক ট্যাবলেট ও ৩০ পিস সিভিট প্রদান করা হয়েছে। যা পুলিশ সদস্যদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। এছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমানে মাস্ক, হ্যান্ডগ্লাবস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সাবান দিয়েছি। আর সকল পুলিশ সদস্যদের সুস্থ রাখতে আমাদের এই সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত হয়ে থানার ভেতরে ও বাইরে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ ও বাইরে দায়িত্ব পালনের সময় পুলিশের গাড়িতে গরম পানি রাখার জন্য ফ্ল্যাক্স, চা, লেক্সাস বিস্কুক, এবং শরীরের তাপমাত্রা নির্নয়ের জন্য প্রত্যেক থানা ফাঁড়ীতে একটি করে ডিজিটাল থার্মোমিটার ও একটি করে ব্লাড প্রেসার মেশিন (বিপি মেশিন) কিনে দেয়া হয়েছে। যাতেকরে সকল পুলিশ সদস্যরা তাদের শরীরের তাপমাত্রা নির্নয় করতে পারে ও দায়িত্ব পালনকালে তারা কিছু সময় পরপর গাড়িতে বসেই চা ও গরম পানি খেতে পারেন।
শরীয়তপুরের সকল থানা ও পুলিশ লাইন্সে বড় বড় তাবু টানানো হয়েছে। দায়িত্ব পালনের জন্য কোনো পুলিশ সদস্য থানা ও ব্যারাকের বাইরে বের হওয়ার সময় আগে ওই তাবুতে যাবেন। সিভিল ড্রেস বদলে তাবুর ভেতরে পরতে হবে ডিউটি পোশাক। এরপর দায়িত্ব পালন শেষে যখন আবার ব্যারাক বা থানায় ফিরবেন তখনও সবার আগে ঢুকতে হবে সেই তাবুর ভেতরে। বাইরে ব্যবহার করে আসা পোশাক বদলে তাবু থেকে সরাসরি চলে যেতে হবে গোসলের জায়গায়। যে পোশাক পরে দায়িত্ব পালন করা হয়েছে তা ধোয়ার আগে নিজ কক্ষে নেওয়া যাবে না। প্রতিটি সদস্য গোসল শেষে এরপর যেতে পারবেন থানা বা ব্যারাকে নিজ নিজ বসবাসের জায়গায়। এক সঙ্গে যাতে পুলিশের অনেক সদস্যের মধ্যে করোনার ভাইরাস সংক্রমিত না হয় সেই লক্ষ্যে জেলা পুলিশের কল্যানে এমন আয়োজন সম্পন্ন করেন শরীয়তপুর জেলার পুলিশ সুপার এস. এম. আশরাফুজ্জামান।
দৈনিক হুংকারে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।