
শরীয়তপুর সদর উপজেলার শৌলপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইয়াছিন হাওলাদার ও তার ভাই মোজাম্মেল হাওলাদার পুলিশের তদন্ত কাজে বাঁধা প্রদান পরবর্তী পুলিশ অফিসারকে চর-থাপ্পর মারার ঘটনায় পালং মডেল থানায় মামলা হয়েছে।
ইউনিয়নের গ্রাম চিকন্দী এলাকায় মারপিটের ঘটনার অভিযোগ তদন্ত করতে গেলে ২৪ আগস্ট সোমবার বিকাল ৩টার দিকে এই ঘটনা ঘটিয়ে চেয়ারম্যান ও তার ভাই আত্মগোপন করেছে বলে জানাগেছে। ঘটনাস্থল থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। এজাহারভুক্ত আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। চিকন্দী পুলিশ ফাঁড়ি, পালং মডেল থানা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শৌলপাড়া ইউনিয়নের গ্রাম চিকন্দী গ্রামের মৃত গনি হাওলাদারের পুত্র রাজ্জাক (২৫) তার পিতার মৃত্যুতে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে মানসিক রোগী হয়ে যায়। সেই থেকে রাজ্জাককে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে তার মা করিমন নেছা। গত ১৭ আগস্ট রাজ্জাক গাছ কেঁটে শীকলসহ বাড়ির থেকে বের হয়ে যায়। পরে রাত ১টার দিকে প্রতিবেশী মৃত কাদের হাওলাদারের বাড়িতে গিয়ে উৎপাত শুরু করে। এই দেখে ওই বাড়ির সোহাগ হাওলাদার, ইতি বেগম, ইমা আক্তার ও রহিমা বেগম মিলে রাজ্জাককে মারপিট করে হাড় ভাঙ্গা জখম করে। আহত ছেলেকে হাসপাতালে রেখে করিমন নেছা পালং মডেল থানায় অভিযোগ করেন। পালং মডেল থানা অফিসার ইনচার্জের নির্দেশে বিষয়টি তদন্ত করতে যায় চিকন্দী পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মো. ফারুক আহমেদ। তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতেই ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মামলার প্রধান আসামী ইয়াছিন হাওলাদার ও তার ভাই মামলার সহযোগী আসামী মোজাম্মেল হাওলাদার বাদীনি করিমন নেছাকে মারধর করে। তদন্ত কর্মকর্তা মোজাম্মেল হাওলাদারকে আটক করলে তদন্ত কর্মকর্তা ফারুক আহমেদকে চর-থাপ্পর মেরে চেয়ারম্যান ইয়াছিন হাওলাদার তার ভাই মোজাম্মেলকে ছাড়িয়ে নেয়। পরে পালং মডেল থানা পুলিশ ও চিকন্দী ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং ঘটনাস্থল থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই জনকে আটক করে। এই বিষয়ে চিকন্দী পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মো. ফারুক আহমেদ বলেন, পালং থানার নির্দেশে একটি অভিযোগের তদন্ত করতে এলাকায় যাই। আমার উপস্থিতিতেই চেয়ারম্যানের ভাই বাদিনীকে মারধর করে। আমি চেয়ারম্যানের ভাইকে গ্রেফতার করতে গেলে চেয়ারম্যান আমার সাথে ধস্তাধস্তি করে ও চর-থাপ্পর মেরে আসামীকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে।
পালং মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, একটি মানসিক প্রতিবন্দী ছেলেকে মারধর করে হাসপাতালে পাঠাইছে। বিষয়টি তদন্ত করতে গেলে চেয়ারম্যান ইয়াছিন হাওলাদার ও তার ভাই মোজাম্মেল হাওলাদার মিলে একজন পুলিশ অফিসারের তদন্ত কাজে বাঁধা প্রদান করেছে এবং গায়ে হাত দিয়েছে। এই বিষয়টি বর্ধাস্ত করা যায় না। এই বিষয়ে চেয়ারম্যান ও তার ভাই মোজাম্মেল হাওলাদারের নামে মামলা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে আটক করা হয়। আসামীদের গ্রেফতারে এলাকায় পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
দৈনিক হুংকারে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।