
আজ থেকে ৫ মাস পূর্ব (১১ মার্চ) থেকে শরীয়তপুর স্বাস্থ্য বিভাগ করোনা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম শুরু করে। জনসচেতনতায় সিভিল সার্জন অফিস ও সকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খোলা হয় করোনা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। অদ্যবধি স্বাস্থ্য বিভাগ তাদের স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।
গত ১১ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত জেলায় ৬৬২ জনকে হোম কোয়ারিন্টিনে রেখে তাদের মধ্য থেকে ৪৫৫ জন সুস্থ্য ঘোষণা করেন। সেই পর্যন্ত আইসোলেশন বা প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে কোন রোগীকে রাখার প্রয়োজন হয় নাই। জুলাই মাসে ২০৭ জন বিদেশ ফেরৎদের হোম কোয়ারিন্টিনে রেখে স্বাস্থ্য বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়। জুলাই মাস শেষে স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিবেদন থেকে জানা যায় ওই মাসে তারা ৫২২ জন রোগীর মাঝে করোনার উপসর্গ পাওয়ায় তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে। তাদের মধ্য থেকে ২৯ জনের করোন পজেটিভ আসে। পজেটিভ রোগীর মধ্য থেকে নড়িয়া ও ডামুড্যা উপজেলায় ১ জন করে মোট দুইজন মৃত্যুবরণ করে।
করোনার প্রভাব বাড়তে থাকে। মে মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত দেখা গেছে জেলা থেকে মোট ২৭৪০ জন করোনা সন্দেহভাজন রোগীর নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাদের মধ্য থেকে ১২৫ জনের দেহে করোনার পজেটিভ পাওয়া যায়। এই সময়ের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫৪ জন সুস্থ হয়। কিন্তু এদের মধ্য থেকে নড়িয়া উপজেলায় আরও ১ জনের মৃত্যু হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাড়ায় ৩ জনে।
জুন মাসে দেখা যায় জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫৮১ জন এবং তাদের মধ্য থেকে ২৫১ জন সুস্থ হয়ে যায়। জুন মাসেও জাজিরা ও ভেদরগঞ্জ উপজেলায় ১ জন করে ২ জনের মৃত্যু হয়। জুনের শেষ দিন পর্যন্ত জেলায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাড়ায় ৫ জনে। সবচেয়ে বেশী মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয় জুলাই মাসে। স্বাস্থ্য বিভাগের প্রদত্ত তথ্য মতে দেখা যায় জুলাই মাসের শেষ দিন পর্যন্ত ১ হাজার ৬৮ জনের দেহে করোনা পজেটিভ পাওয়া যায়। এই সময়ের মধ্যে ৮৬২ জন করোনা পজেটিভ রোগী সুস্থ হয়ে করোনা নেগেটিভে পৌঁছেছে। তবে নতুন করে নড়িয়ায় ৩ জন ও ভেদরগঞ্জে ১ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাড়ায় ৯ জনে।
আগস্টের ১০ তারিখ পর্যন্ত জেলায় করোনা ভাইরাসের প্রভাব ৫ মাস পূর্ণ করেছে। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে জেলায় এই পর্যন্ত ১ হাজার ২৫৩ জন করোনা পজেটিভ হয়েছে। এদের মধ্য থেকে ৯৯১ জন সুস্থ হয়েছে। সদর, জাজিরা ও ডামুড্যা উপজেলায় ১ জন করে, ভেদরগঞ্জে ২ জন এবং নড়িয়ায় ৬ জনসহ মোট ১১ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তবে গোসাইরহাট উপজেলায় এই পর্যন্ত ১৬১ জন রোগী করোনা আক্রান্ত হলেও কোন রোগীর মৃত্যু হয় নাই। এই পর্যন্ত সদর উপজেলায় ৪৮০ করোনা পজেটিভ হয়ে জেলায় সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। তবে এদের মধ্য থেকে ৩৮০ রোগী সুস্থ হয়েছে। জেলায় সবচেয়ে কম করোনা আক্রান্ত হয়েছে জাজিরা উপজেলায়। জাজিরায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৪২ জন এবং এই পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ১০২ জন।
এই বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. এসএম আব্দুল্লাহ আল মুরাদ বলেন, করোনাকে ছোট করে দেখার কিছুই নাই। জুলাইর শেষ ও আগস্টের শুরুর দিকে করোনা রোগী বেশী চিহ্নিত হয়েছে। এই সময় ঈদের ছুটিতে জেলায় মানুষের সমাগম বেশী ছিল। তাছাড়া উপসর্গ থাকলেই তাদের নমুনা সংগ্রহ করি। এতে করোনা পজেটিভও একটু বেশী ধরা পড়ছে। করোনা পজেটিভ ধরা পড়লে তাকে অবশ্যই হোম কোয়ারিন্টিনে থাকতে হবে। আগের মতোই স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে।
দৈনিক হুংকারে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।