বুধবার, ৩১ মে ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১০ জিলকদ ১৪৪৪ হিজরি
বুধবার, ৩১ মে ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
Notice: Undefined index: top-menu-onoff-sm in /home/hongkar/public_html/wp-content/themes/newsuncode/lib/part/top-part.php on line 67

গোসাইরহাটে জলাবদ্ধ জমিতে কোটি টাকার ফসল, কৃষকদের মুখে প্রশান্তির হাসি

গোসাইরহাটে জলাবদ্ধ জমিতে খাল কেটে পিভিসি পাইপ দিয়ে পানি নিষ্কাশনের করা হচ্ছে। ছবি-দৈনিক হুংকার।

শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার কুচাইপট্টি ইউনিয়নের ৩টি ওয়ার্ডের বসকাটি, চরমাইজারি ও কুলচরিপাতার চরের কৃষকদের মুখে এখন প্রশান্তির হাসি। তাদের জলাবদ্ধ জমিতে এখন কয়েক কোটি টাকার ফসল উৎপাদন হয়েছে। এই ঘটনার শুরু গত বছরের নভেম্বর মাসে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ‘এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবেনা’ বাস্তবায়নে জেলা ও উপজেলায় মতবিনিময় সভা শুরু করেছেন। গোসাইরহাট উপজেলায় আয়োজিত সভায় কুচাইপট্টি ইউনিয়নের কিছু কৃষক স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন স্বপনকে নিয়ে তাদের এলাকার জলাবদ্ধতা দূরকরণে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
তাৎক্ষণিক জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাফী বিন কবিরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল জলাবদ্ধ এলাকা পরিদর্শন করে। জেলা প্রশাসকের পরামর্শে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলা পরিষদ থেকে প্রকল্প দিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এর মাধ্যমে জলাবদ্ধতা স্থানগুলোতে খাল কেটে ১০-১২ ইঞ্চি পিভিসি পাইপ দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেন।
অফিস সূত্রে জানায়, একসময় যে জমি বছরের ৮ মাস পানির নিচে থাকতো এখন সেখানে রবি শস্যের বাম্ফার ফলন। নভেম্বরে পানি নিষ্কাশনের পর সেখানে সয়াবিন চাষ হয়েছে ২২০ একর জমিতে, মরিচ হয়েছে ১০০ একরে, মেস্তা পাট হয়েছে ১৮০ একর জমিতে। প্রায় ৬০০ একর জমি এখন চাষের আওতায় এসেছে। উৎপাদিত ফসলের মধ্যে সয়াবিন হয়েছে প্রায় ৯৬ মেট্রিক টন যার বাজার মূল্য প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা, মরিচ হয়েছে ৩২০ মেট্রিকটন যার বাজার মূল্য ২ কোটি টাকা, পাটের ফলনও প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি।
স্থানীয় কৃষক নাসির উদ্দীন বলেন, প্রায় ৩০-৪০ বছর ধরে এই জমিগুলোতে জলাবদ্ধতার জন্য কোন ফসল ঘরে আনা যেতো না। এখন আমাদের ঘরে আর আর্থিক সংকট থাকবেনা। প্রধানমন্ত্রীর ও ডিসি সাহেবকে ধন্যবাদ।
কুচাইপট্টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন স্বপন বলেন, ইউএনও মহোদয়ের সহযোগিতায় আমরা সবাই মিলে কাজটা করেছি। কৃষকের উপকার হয়েছে খুব আত্মতৃপ্তি পাচ্ছি।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, আগের জলাবদ্ধ জমিতে এখন তিন ফসল হবে। এটা আমাদের কৃষিজ উৎপাদন বৃদ্ধি করবে।
গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কাফী বিন কবির বলেন, জেলা প্রশাসক স্যার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে একটি সামাজিক আন্দোলনে রূপ দিতে চেয়েছেন। আমরা তাকে সহযোগিতা করেছি।
শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে আমরা বৈশ্বিক মন্দা মোকাবিলায় হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনা করেছি। তাই শরীয়তপুর জেলার প্রত্যেকটি উপজেলায় অনাবাদি জমিকে আমরা চাষের আওতায় আনার প্রচেষ্টা চালিয়েছি। আমাদের সফলতার হার সন্তোষজনক। এই ধারা অব্যাহত থাকবে। কুচাইপট্টি ইউনিয়নের তিনটি গ্রামের কৃষকদের ৩০-৪০ বছরের জলাবদ্ধতা সমাধান হওয়ায় সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। একই সাথে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন এর পাশাপাশি রপ্তানি যোগ্য পণ্যের হার বৃদ্ধি পেয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

দৈনিক হুংকারে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।