
শরীয়তপুরে মাঘ ও ফাল্গুন মাসে সরিষা, ধনিয়া ও কালোজিরার মাঠে ফুল থাকে। ওই সকল ফুল থেকে মধু আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছে জেলা কৃষি বিভাগ। মধু আহরণের সময় শেষের দিকে তবুও লক্ষমাত্রার অর্ধেকেও পৌঁছতে পারেনি মৌয়ালরা।
শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি রবি মৌসুমে জেলার ১৪ হাজার ২৪০ হেক্টর জমিতে সরিষা, ৫ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে ধনিয়া ও ৩ হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে কালোজিরার আবাদ হয়েছে। ওই আবাদকৃত ফসলের ফুল থেকে ৩৬ হাজার ৯৬০ কেজি মধু আহরণের লক্ষে ১২ হাজার ১১০টি মৌবাক্স স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়। এই পর্যন্ত জেলায় ৯ হাজার ৯৪০টি মৌবাক্স স্থাপন করে এই পর্যন্ত ১৬ হাজার ৬৫০ কেজি মধু সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে মৌয়ালরা। পরিশ্রমের তুলনায় মধুর বাজার মূল্য কম হওয়ায় মধু আহরণে উৎসাহ হারাচ্ছে মৌয়াল।
মৌয়াল জাহিদ হাসান জানায়, তার খামারে ২২০টি মৌবাক্স রয়েছে। বছরে ৬ মাস বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে ভিন্ন ভিন্ন ফুল থেকে সে মধু আহরণ করে। মধু আহরণের চলতি মৌসুমের সারে তিন মাসে তার খামার থেকে প্রায় ৫ মেট্রিকটন মধু সংগ্রহ হয়েছে। শরীয়তপুরে মৌবাক্স বসিয়ে প্রথমে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহ করেছেন। এখন ধনিয়া ও কালোজিরা ফুলের মধু সংগ্রহ চলছে। কালোজিরা ফুলের মধু সংগ্রহ শেষে লিচু ফুলের মধু সংগ্রহে অন্যত্র চলে যাবেন তিনি।
জাহিদ আরো জানায়, বছরে ৬ মাস মৌ মাছিরা মধু সংগ্রহ করে। অবশিষ্ট ৬ মাস মৌ মাছিদের অন্য খাবার দিয়ে বাচিয়ে রাখতে হয়। বছর শেষে সমস্ত খরচ বাদ দিয়ে তার ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা বাচে। মধুর বাজার মূল্য আরো একটু বেশী হলে মৌয়ালের সংখ্যা বৃদ্ধি পেত।
খামার থেকে মধু ক্রয়কালে ক্রেতারা জানায়, খাঁটি মধু পেতে তারা খামারে এসেছে। মধু একটা প্রয়োজনীয় ভেষজ। মধুর পুষ্টিগুন ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে। মৌয়ালদের সার্বিক সহায়তা দিয়ে সচল রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন কৃষি বিভাগের প্রতি।
শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. রবীআহ নুর আহমেদ বলেন, গত বছরে জেলা থেকে যে পরিমান মধু সংগৃহীত হয়েছে তার থেকে ৩ শতাংশ বৃদ্ধি ধরে এই বছরের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। মধু সংগ্রহের সময় প্রায় শেষ তবুও লক্ষমাত্রার অর্ধেক মধুও সংগ্রহ করতে পারেনি মৌয়াল। মধুর বাজার মূল্য কম হওয়ায় মৌয়ালা মধু সংগ্রহে আগ্রহ হারাচ্ছেন। তাছাড়া গত বছর পর্যন্ত একটি প্রল্পের মাধ্যমে মৌয়ালদের সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল। প্রকল্পের নবায়না না হওয়ায় সেই সহায়তা বঞ্চিত হচ্ছে মৌয়াল। সব মিলিয়েই মধু উৎপাদনের লক্ষমাত্রায় পৌঁছা সম্ভব হবে না।
দৈনিক হুংকারে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।