
মাঘ মাস শেষ হতে না হতেই শরীয়তপুর জেলার জাজিরা, ভেদরগঞ্জ ও গোসাইরহাট উপজেলার বেশ কিছু আম গাছে এসেছে মুকুল। তাতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন শরীয়তপুরের আমচাষিরা। মুকুল আসার আগ মুহূর্তে গাছের প্রয়োজন পড়ে বাড়তি যতেœর। তাতেই গাছে টিকে থাকে মুকুল। তাই ছোট-বড় আম বাগান পরিচর্যায় চাষিরা বর্তমানে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন।
বাগানের আগাছা পরিষ্কারসহ পোকা দমনে করছেন কীটনাশক স্প্রে। এই পরিচর্যায় দূর হবে পোকা, তেমনি গাছে মিলবে স্বাস্থ্যকর মুকুল। ফলনও আসবে ভালো।
এদিকে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ভেদরগঞ্জ উপজেলার উপসহকারী কৃষি অফিসার মামুনুর রশিদ হাসিব জানান, আমাদের ভেদরগঞ্জ ও জাজিরা উপজেলায় প্রায় ৬০ হেক্টর জমিতে ৭৫০ টি ছোট বড় আম বাগান রয়েছে। আ¤্রপলি, ফজলি, লখনা, হাড়িভাঙ্গা গোপালভোগ, আশ্বিনা, হিমসাগর, দুধসরসহ প্রায় ১৮ এর অধিক জাতের আম চাষ করা হয়ে থাকে ।
আগাম বাগান পরিচর্যার বিষয়ে সখিপুর রশিদ বেপারী কান্দি গ্রামের আমচাষি কালাম বেপারী বলেন, মাঘের মাঝামাঝি শেষে গাছে মুকুল আশায় কৃষি অফিসারের পরামর্শ নিই। অধিক মুনাফার আশায় মৌসুমের আগেই বাগানের যতœ নেয়া শুরু করেছি। ইতোমধ্যে ২.৫ ইসি ফিডল্যাম, সালফার শাহেন ও ইমিডাক্লোপ্রিড ইমিসাফি ঔষুধ স্প্রে করছি। এতে গাছে অধিক মুকুল আসার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আর আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে ভালো ফলন হবে।
জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি গ্রামের আমচাষি জসিম ঢালী বলেন, দিনে সূর্যের তেজ আর রাতে পড়ছে শীত। আবার কৃষি অফিসারদের পরামর্শ এমন আবহাওয়াতে গাছের পরিচর্যা প্রয়োজন। তাই গাছে মুকুল টিকিয়ে রাখতে ও ভালো ফলন পাওয়ার আশায় বাগান পরিচর্যা করছি। কিন্তু শীত বেশি পড়লে মুকুল টিকবে না, ফলনও ভালো হবে না।
তিনি আরও বলেন, কুয়াশা খুব বেশি হলে বা দীর্ঘদিন থাকলে ‘পাউডারি মিলডিউ’ নামে রোগ হতে পারে। এ রোগের কারণে প্রথমে মুকুল সাদাসাদা হয়ে পড়ে কালো বর্ণ ধারণ করে ঝরে পড়ে। দীর্ঘদিন কুয়াশা অথবা হপার পোকার আক্রমণে মুকুলে সটিবল বা কালো আস্তরণ পড়ে থাকে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে সালফার জাতীয় ফাংগিসাইড যেমন-থিউবিট, কমোলাস নামের ঔষুধ প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম মিশিয়ে ব্যবহার করলে তা থেকে উপকার মিলবে।
এ বিষয়ে জাজিরা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জামাল হোসেন জানান, আবহাওয়া সূত্র মতে কয়েক দিনের মধ্যেই কমে আসবে শীত। তাই সামনের দিনগুলোতে আবহাওয়া ভালো থাকলে এবারও আমের বাম্পার ফলন হবে আশা করা যায়। এ বিষয়ে চাষিদের বাগান পরিচর্যায় আগে থেকেই ওষুধ স্প্রে করার নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে এবং নিয়মিত বালাই নাশক স্প্রে অব্যাহত আছে। আর চাষিরাও অধিক ফলনের আশায় আমাদের পরামশ্য অনুযায়ী কাজও শুরু করেছেন।
দৈনিক হুংকারে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।