
বেওয়ারিশ কুকুর-বিড়াল বা অন্যান্য যে কোন পশুর কামড়ে বা আচড়ে দিলে র্যাবিক্স ভিসি ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় জলাতঙ্ক আতঙ্ক থেকেই যায়। তাই পোষা কুকুর-বিড়ালের পাশাপাশি বেওয়ারিশ কুকুর-বিড়াল বা অন্যান্য যেকোন প্রাণী কামড়ে দিলে প্রত্যেককে সরকারি হাসপাতাল থেকে র্যাবিক্স ভিসি গ্রহণ করতে হবে।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের র্যাবিক্স ভিসি প্রদান কক্ষে দায়িত্বরতরা জানায়, প্রতিদিন হাসপাতালে টিকা নিতে যাওয়া মানুষের বেশিরভাগই ঘরে পোষা প্রাণীর মাধ্যমে আক্রান্ত হয়। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিশুরা ভয়ে আঁচড়-কামড়ের কথা বাবা-মাকে বলে না। সময়মতো ভ্যাকসিন গ্রহণ না করলে পোষা প্রাণীর কামড়েও মরনব্যাধি জলাতঙ্ক হতে পারে। জলাতঙ্ক হলে মৃত্যু নিশ্চিত।
সূত্রটি আরো জানায়, হাসপাতালে পর্যাপ্ত র্যাবিক্স ভিসি ভ্যাকসিন রয়েছে। গত জানুয়ারী মাসে হাসপাতাল থেকে ৩৬৮ জন কুকুর-বিড়ালসহ অন্যান্য প্রানীর কামড়ে আক্রান্ত হয়ে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন। আক্রান্তদের মধ্যে নারী ২০০ জন ও পুরুষ ১৬৮ জন। এছাড়াও সাপের কামড়ের এ্যান্ট্রি ভ্যানমও রয়েছে এই হাসপাতালে। তবে এই ভ্যাকসিনের ব্যবহার খুবই কম। সাপের ধরণ নিশ্চিত না করে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা যায় না।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের ভ্যাকসিন প্রদান কক্ষে গিয়ে দেখা যায়, নিজের পোষা বিড়ালের আঁচড়ে আক্রান্ত হয়ে জলাতঙ্কের টিকা নিতে এসেছেন চৈতি (১৭)। সে পরিবারের সাথে ডাইনিং টেবিলে খেতে বসেছিল। তখন পায়ের কাছে বসে থাকা পোষা বিড়ালটি আচমকা আঁচড় দেয়। এতে তিন-চারটি নখের আঁচড় পায়ে বসে যায়। পা থেকে হালকা রক্ত বের হয়। তাই জলাতঙ্কের টিকা নিতে হাসপাতালে ছুটে এসেছে।
৮ বছর বয়সী রেদওয়ান হোসেন পোষা বিড়ালকে আদর করতে গিয়ে ঠোঁটে কামড় খায়। ভয়ে প্রথমে কাউকে কিছু না বললেও এক পর্যায়ে তার বাবা বিষয়টি জানতে পারে। পরে তাকে ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন।
চিকিৎসকরা বলছেন, শিশুরা কুকুর-বিড়াল নিয়ে খেলাধুলা করে, মাঝে মধ্যে বিরক্ত করে, রাগায়। ছোট শিশুদের শরীরের উপরের অংশে কুকুর বিড়াল সহজে কামড়ে দিতে পারে। যা বেশী বিপজ্জনক। কামড়ের সংক্রমণ স্নায়ুতন্ত্র বেয়ে দ্রæত মস্তিষ্কে পৌঁছে যায়। শিশুর ত্বক নরম হওয়ায় ইনজুরি বেশি মাত্রার হয়। আক্রান্তের কথা মা-বাবা জেনে গেলে বকবে বা ইনজেকশন দিতে হবে, এই ভয়ে তারা বেশিরভাগ সময় বিষয়টা গোপন রাখে। তাতে ঝুঁকি বেড়ে যায় বহুগুন। জলাতঙ্ক রোগের কোন চিকিৎসা নেই। ফলে রোগীর মৃত্যু নিশ্চিত। আক্রান্ত হলে সাথে সাথে ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে হবে।
দৈনিক হুংকারে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।