
শরীয়তপুর নড়িয়া উপজেলার ঘরিসার ইউনিয়নে ভিজিএফ’র চাল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পেশাদার জেলেরা। প্রকৃত জেলে নয় কিন্তু জেলে কার্ড রয়েছে এমন অনেকেই ভিজিএফ’র চাল পাচ্ছে।
পদ্মা নদীতে কখনও মাছ শিকার করেনি এমন অনেকেরই জেলের কার্ড রয়েছে। আবার ভিন্ন পেশার মানুষদের দেয়া হচ্ছে জেলেদের ভিজিএফ’র চাল। এমন হযবরল অবস্থার মধ্যে ঘরিসার ইউনিয়ন সহ নড়িয়া উপজেলার জেলেদের মধ্যে ভিজিএফ এর চাল বিতরণ কার্যক্রম চলছে। স্থাণীয় জেলেদের অনেকেই অভিযোগ করেছেন কার্ডধারীরা অনেকেই প্রকৃত জেলে নয়। অন্য পেশার সাথে যুক্ত সচ্ছল ব্যাক্তিদের নামেও রয়েছে জেলে কার্ড।
প্রকৃত অনেক জেলে রয়েছে যাদের নামে কোন জেলে কার্ড হয়নি তারা বঞ্চিত হচ্ছে ভিজিএফ’র চাল থেকে। ভিজিএফ’র চাল বিতরণের সময় কার্ড না থাকলেও প্রকৃত জেলেরা এসে ভীড় করছে জেলে চাল নেয়ার জন্য। আবার অনেককেই দেখা গেছে জেলে কার্ড নিয়ে হাজির হয়েছে এদেরকে চালের টোকেন দেয়া হয়নি। জেলে কার্ডের নাম নিয়ে এমন অব্যবস্থাপনার বিষয়ে মৎস্য কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যান পরস্পরকে দোষারোপ করছেন। সরকার প্রকৃত জেলেদের তালিকা প্রনয়নের মাধ্যমে ভিজিএফ’র চাল বিতরণ করার কথা বললেও তা মানা হচ্ছে না।
স্থানীয় চেয়ারম্যান,মেম্বররা ভোটের রাজনীতির স্বার্থে প্রকৃত জেলেদের বাদ দিয়ে নিজেদের পছন্দ মত লোককে ভিজিএফ’র চাল বিতরণ করছেন বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী জেলে সিরাজ ব্যপারী, শাহীন দেওয়ান, রফিকুল ইসলাম, রাজ্জাক, নাগর, শান্ত, ইব্রাহীম, ইসমাইল ও শাহে আলমসহ বেশ কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, ২০১৭ সালে আমরা জেলে কার্ড পাই। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত কোনো চাল পাইনি। অথচ আমাদের সঙ্গের অন্য জেলেরা চাল পাচ্ছে। চাল বিতরণের সময় আমরা সেখানে গেলে বলা হয় তালিকায় আমাদের নাম নেই। তবে এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি চেয়ারম্যান।
ঘরিসার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আ: রব খান বলেন, প্রকৃত জেলে নয় এমন অনেকের নামেই কার্ড থাকায় তাদেরকে ভিজিএফ’র চাল দিতে বাধ্য হয়েছেন। তার ইউনিয়নে কার্ডধারী জেলে রয়েছে ১ হাজার ৮৬ জন , কিন্ত তিনি ৭’শ ৬৮ জেলের নামে বরাদ্ধ পেয়েছেন, তাই কার্ডধারী বাকি জেলেদের চাল দিতে পারেননি তিনি।
তিনি আর ও জানান, হালইসার কার্ডধারী জেলে রয়েছে ৩’শ জন। যার কারনে একটু এলোমেলো হয়েছে।
নড়িয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, তিনি নিজেও প্রত্যক্ষ করেছেন জেলে নয় এমন অনেকেই চাল নিয়েছেন। তার কাছে দেয়া ভিজিএফর তালিকায় এদের নাম থাকায় তার কিছুই করার ছিল না। তবে তিনি এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করবেন বলে জানান।
নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়ন্তী রুপা রায় বলেন, আসলে জেলেদের কার্ডগুলি করা হয় ইউনিয়ন পর্যায়ে। এখন যদি কোন জেলে চাউল পাচ্ছে না এমন অভিযোগ থাকে । তাহলে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার মাধ্যমে সমাধান করার চেষ্টা করবো।
দৈনিক হুংকারে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।