সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, ৪ রমজান ১৪৪৪ হিজরি
সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
Notice: Undefined index: top-menu-onoff-sm in /home/hongkar/public_html/wp-content/themes/newsuncode/lib/part/top-part.php on line 67

পদ্মার তীরে বসে সময় কাটে তাজেল নেছার

পদ্মার তীরে বসে আছেন তাজেল নেছা। ছবি-দৈনিক হুংকার।

পদ্মা নদীর তীরে বসে ছলছল চোখে পদ্মা নদীর কড়াল স্রোতের দিকে তাকিয়ে থাকেন বিধবা তাজেল নেছা। চোখ-মুখ থেকে হারিয়ে গেছে হস্যজ্জ্বল ভাব। সব সময় চিন্তিত থাকে তার মস্তিস্ক। তাকে দেখে যে কেউই ভাববে দুচিন্তার কড়াল আঘাত তার বুকের পাজর ভাঙছে। সেই আঘাত তাজেল নেছার চেহারায় প্রকাশ পাচ্ছে। কাছে গিয়ে তার সাথে কথা হয়।
পদ্মার তীরে দাঁড়িয়ে তাজেল নেছা জানায়, তিনি স্বামী সন্তান নিয়ে নড়িয়া উপজেলার পদ্মার তীরবর্তী সুরেশ^র গ্রামে বসবাস করতেন। অনেক বছর পূর্বে তার স্বামী হাসমত আলী মাল মারা যায়। সেই থেকে ৫ মেয়ে নিয়ে জীবন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছেন তিনি। ইতোমধ্যে ৪ মেয়েকে বিয়ে দিয়ে অনেকটা দায়মুক্ত হয়েছেন। এখন ছোট মেয়ে স্বর্ণাকে নিয়ে তার সংসার। স্বর্ণা এবছর দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী।
তিনি আরও জানায়, পদ্মার দক্ষিণ তীর রক্ষা বাঁধ সংলগ্ন তার একটি বসত বাড়ি ছিল। সেখানে বসত ঘর, রান্নাঘরসহ জীবন ধারণের সকল ব্যবস্থাই ছিল। চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরুতে পদ্মার দক্ষিন তীরের সুরেশ^র এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হলে তাজেল নেছার বসত ঘরটি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। এখন পাশর্^বর্তী একটা বাঁশ বাগানের মধ্যে দুই চাল দিয়ে একটা মাথা গোজার ঢাই করেছেন। কলেজ পড়ুয়া মেয়ে স্বর্ণাকে নিয়ে সেখানে তার বসবাস।
বন্যা ও নদী ভাঙ্গন সময় কোন ত্রাণ বা আর্থিক সুবিধা পেয়েছেন কিনা? জানতে চাইলে তাজেল নেছা জানায়, আমাকে এই পর্যন্ত স্থায়ী পুন:বাসনে সরকারি-বেসরকারী কোন প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসেনি। অনাহারে অর্ধাহরে খুব কষ্টে তার দিন কাটে। একই সাথে করোনা, বন্যা ও নদী ভাঙ্গন তার সময় থামিয়ে দিয়েছে। এখন শুধু ছোট মেয়েটাকে নিয়ে ভাবছি। ওর পড়ালেখার যোগ্যতা অনুযায়ী যদি ছোটখাট একটা কাজের ব্যবস্থা হইত তাহলে মা-মেয়ের একসাথে কোন রকম চলে যেত। আপনারা যতি পারেন তাহলে আমার মেয়েটাকে একটা কাজ দিয়ে উপকার করবেন।
নদীর তীরে দাঁড়িয়ে থাকেন কেন? এর জবাবে তাজেল নেছা বলেন, যেখানে দাঁড়িয়ে আছি তার অদুরে নদীর ভিতরে আমার বসত ঘরের ভিটা। সেখানে আজ অথৈই নদী। নদী ভাঙ্গন রক্ষা ঠেকাতে বড় বড় শিপ আসে। শিপ থেকে বালু ভর্তি বস্তা ফেলছে। দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্য দেখি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

দৈনিক হুংকারে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।