
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঘড়িসার ইউনিয়নের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘড়িসার বাজারের সরকারি গণটয়লেটে যাওয়ার রাস্তাটি দফায় দফায় দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জাভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মনির হোসেন চোকদার এর বিরুদ্ধে। তার বিল্ডিং এর পশ্চিম পাশের সরকারি গণটয়লেটে যাতায়াতসহ সরকারি টিউবওয়েল থেকে খাবার পানি সংগ্রহে যাতায়াতের রাস্তাটিতে টিনের বেড়া ও সাটার লাগিয়ে দখল নেওয়ার চেষ্টা করে সর্বশেষ পহেলা মে। কিন্তু দখলের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে পরবর্তিতে ঘড়িসার বাজার বনিক সমিতির সদস্য সহ বাজারের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নড়িয়া থানায় একটি মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান বনিক সমিতিসহ বাজারের সকল ব্যবসায়ীরা।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বৃহত্তম এই বাজারটিতে হাজারের অধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বাজারের ব্যবসায়িরা জানান, বাজার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বাজারের উত্তর পাশের গলি থেকে ছয় সাত ফুট চওড়া প্রায় ৩০ ফুট দীর্ঘ মাটির রাস্তাটি বাজারের গণটয়লেটে যাতায়াত ও খাবার পানি সরবরাহে ব্যবহার হয়ে আসছে। ব্যবসায়ীদের সুবিধায় সরকারি ভাবে বর্তমানে আধুনিক টয়লেট নির্মাণ করে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। আমরা জানতাম রাস্তাটি সরকারি। কিন্তু হঠাৎ করেই কাউকে কোন কিছু না জানিয়ে টয়লেটে যাওয়ার রাস্তাটি দখল নিতে দুই পাশে টিন দিয়ে বেড়া দেয় মনির হোসেন চোকদার ।
এতে টয়লেট সাড়তে এসে টয়লেটে যেতে না পেড়ে ক্ষিপ্ত হয়ে জড়ো হতে থাকে বাজারের ব্যবসায়ীরা। বেড়া দিয়ে বাজার ছেড়ে সরে থাকেন মনির হোসেন চোকদার। তার ভাড়া দেওয়া দোকানের হোটেল ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ফোন নাম্বার নিয়ে তাকে ফোন দেয় ব্যবসায়ীরা। তখন মনির হোসেন জানায় ক্রয় সূত্রে উক্ত রাস্তাটির মালিক সে নিজে। তিনি বলেন, টয়লেটে যেতে বিকল্প ব্যবস্থা করেন। তিনি বেড়া খুলবেন না জানিয়ে দেন ব্যবসায়ীদের। তখন উত্তেজিত হয়ে ব্যবসায়ীরা বেড়া ভেঙ্গে ফেলে।
নড়িয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বনিক সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মাল বলেন, মনির হোসেন চোকদারকে ফোন দিয়ে জানতে চাই কেন তিনি ব্যবসায়ীদের টয়লেটে যাওয়ার রাস্তাটি বন্ধ করেছে? তখন মনির হোসেন বলে আমি এই রাস্তার জমি কিনেছি। আমি একটু অসুস্থ ক্রয়কৃত দলিল কাগজপত্র নিয়ে আসো। টয়লেটে যাওয়ার রাস্তাটি কিনতে গেলে কেনো? বলতেই মনির ক্ষিপ্ত হয়ে আমার সাথে বাকবিতন্ডায় জড়ায়। তার পরেও তাকে বনিক সমিতিতে কাগজ পত্র নিয়ে আসতে বলি। কিন্তু মনির বনিক সমিতিতে না এসে নড়িয়া থানায় একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছে। এমন মিথ্যে অভিযোগে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে বাজারের সকল ব্যবসায়ীরা। উত্তেজনা বিরাজ করছে ব্যবসায়ীদের মাঝে।
অভিযোগে দোকানঘর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও, ষড়জমিনে গিয়ে দেখা গেলো মনির হোসেনের হোটেল দোকানঘরটি অক্ষত রয়েছে। দোকানে কোন রকম হামলা বা ভাংচুর হয়নি।
হোটেল ব্যবসার মালিক জানায়, আমার দোকান ভিটির মালিক মনির হোসেন চোকদার। তার দোকানের পশ্চিম পাশের রাস্তার উপর সাটার ও টিনের বেড়া লাগায়। বাজারের ব্যবসায়ীরা টয়লেটে যাওয়ার জন্য এসে রাস্তাটি বন্ধ দেখতে পেয়ে আমার কাছ থেকে মনির হোসেনের মোবাইল নাম্বার নিয়ে ফোন দেয়। কিন্তু সে আসে নাই। পড়ে তারা বেড়া ও সাটার খুলে ফেলে দেয়। তার কোন হোটেল দোকান ভাঙ্গা হয়েছে? জানতে চাইলে সে আরো জানায়, আমার ব্যবসার কোন ক্ষতি হয়নি এবং দোকান ভাংচুর হয়নি। আমি সবসময় হোটেলে খাবার বিক্রি করছি। বাজারের ব্যবসায়ী ও ক্রেতা সাধারণ মানুষ আমার হোটেলে খাচ্ছে। কোন অসুবিধা নেই। তার দোকান ঘরটিতে আমি ব্যবসা করছি। দোকানঘর টি বিল্ডিং। নিচতলা ভাড়া নিয়ে আমি হোটেলের ব্যবসা করছি।
নড়িয়া উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও বনিক সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মাল আরো জানান, বাজারের সরকারি গণটয়লেটে ৫০ বছরের অধিক সময় ধরে এই রাস্তা ব্যবহার করছে মানুষ। রাস্তাটি বন্ধ হলে মানুষ টয়লেটে যাবে কি করে? মনিরকে সকলের সাথে বসে বিষয়টি সমাধান করতে চেয়েছি অথচ ও আমার সমিতির সদস্য ও বাজারের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে চাঁদা চেয়েছি বলে সে মিথ্যা অভিযোগ ও মিথ্যা নিউজ করিয়েছে।
এদিকে ঘড়িসার বাজার বনিক সমিতির সদস্যরা ও বাজারের ব্যবসায়ীরা এর সুষ্ঠু তদন্ত করে টয়লেটে যাওয়ার রাস্তাটি যেন কেউ না আটকায় এ দাবি জানান।
এ বিষয়ে মনির হোসেন চোকদার মোবাইল ফোনে বলেন, আমার জমিনের দলিল আছে। ওসি সাহেব ভার নিয়েছে দেখি কি হয়। তবে উপজেলা আওয়ামী লীগ এর সভাপতি ও বনিক সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মাল এর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না তার বিরুদ্ধে আমার কোন অভিযোগ নাই, তার লোকজন করেছে।
এব্যাপারে নড়িয়া থানার ওসি মোঃ হাফিজুর রহমান জানান, ঘরিসার বাজারের মনির হোসেন চোকদার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ঘরিসার বনিক সমিতি ও কিছু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দৈনিক হুংকারে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।