
এলাকার উন্নয়ন মূলক কাজের জন্য সিড্যা ইউপি’র সদস্যরা শরীয়তপুর-৩ আসনের এমপির সাথে তার বাসভবনে সাক্ষাত করে। এর ফলে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের ছেলে রাব্বি আমিন এর তোপের মুখে পড়েছে ১০ ইউপি সদস্য। তার ভয়ে ওই সদস্যরা পরিষদে যেতে পারছে না বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ডামড্যা উপজেলার সিড্যা ইউনিয়নের ১০ সদস্য শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নাহিম রাজ্জাক এর সাথে সাক্ষাত করে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের ব্যাপারে কথা বলতে তার বাসভবনে যান। এই খবরটি পাওয়ার পর ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আমিন ও তার ছেলে রাব্বি আমিন ফোনে তাদের হুমকি ধামকি দেয়। দেখা করে আসার পর সিড্যা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড সদস্য জালাল উদ্দিনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এসে তার ওপর চেয়ারম্যান ও তার ছেলের লাঠিয়াল বাহিনী হামলা করে। পরে স্থানীয় ও ইউপি সদস্যদের সহযোগিতায় জালাল উদ্দিনকে বাসায় পৌঁছে দেয়া হয়। চেয়ারম্যান তার লাঠিয়াল বাহিনী দ্বারা ইউপি সদস্যদেরকে নিয়মিত হুমকি ধামকি দিয়েই চলছে।
অভিযোগকারী ইউপি সদস্য জানান, গত সাড়ে চার বছরে চেয়ারম্যানের অসহযোগিতায় ও বিমাতা সূলভ আচরণের কারণে আমরা এলাকায় তেমন উন্নয়ন কাজ করতে পারিনি। আমরা জনগনকে অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত হয়ে আসছি। তাছাড়া আমাদের দল ক্ষমতায়। সামনে নির্বাচনে আমরা জনগনের কাছে কি নিয়ে ভোট চাইবো তার জন্যই আমরা মাননীয় সংসদ সদস্যের বাসায় গিয়েছিলাম।
সিড্যা ১ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মোঃ সেলিম সরদার বলেন, আমাদের পাঁচ বছর মেয়াদ শেষের দিকে। আমরা যে সমস্ত উন্নয়নের কথা বলেছি ভোটারদের কাছে সে সকল কাজগুলো সমাপ্ত করতে পারিনি। তাই আমাদের অভিভাবক স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নাহিম রাজ্জাক এর সাথে দেখা করতে ঢাকা গিয়েছিলাম। দেখা করে আসার পর থেকেই সিড্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আমিনের ছেলে রাব্বি আমিন আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয় এবং আমাদের নামে বিভিন্ন এলাকায় কুৎসা রটিয়ে যাচ্ছে। আমাদের মারবে বলে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেয়। বাধ্য হয়েই আমরা ইউএনও স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এখন আমরা চেয়ারম্যানের ছেলের ভয়ে ইউনিয়ন পরিষদেও যেতে পারছিনা।
অভিযোগকারী সিড্যা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য জালাল সরদার বলেন, আমরা আমাদের অভিভাবক শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নাহিম রাজ্জাকের সাথে ঢাকায় গিয়ে দেখা করি। দেখা করে আসার পর থেকেই ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে রাব্বি আমিন আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয় এবং আমার দোকানে আমাকে মারার জন্য হামলা করে। আমি বিষয়টি বুঝতে পেরে দোকানের ঝাপ নামিয়ে ভিতরে বসে থাকি ও ফোনে ইউপি সদস্যসহ অনেককে বিষয়টি জানাই। পরে স্থানীয় ও ইউপি সদস্যরা এসে আমাকে উদ্ধার করে।
সিড্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আমীন বলেন, ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জালাল সরদার বিভিন্ন সময় সরকারের উন্নয়ন নিয়ে বাজে মন্তব্য করে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গিয়ে তাকে শাসিয়েছে বলে আমি শুনেছি। তাকে তার ইউপি’র সদস্যদের লিখিত অভিযোগের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এরিয়ে যান।
নির্বাহী অফিসার মর্তুজা আল মুঈদ বলেন, আমার কাছে ইউপি সদস্যরা একটি লিখিত অভিযোগ করে। এর পরিপেক্ষিতে আমি পরিষদে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করি। কিন্তু অভিযোগকারী কেউ উপস্থিত ছিল না। এখন আমি তদন্ত করছি তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দৈনিক হুংকারে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।