বুধবার, ৩১ মে ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১০ জিলকদ ১৪৪৪ হিজরি
বুধবার, ৩১ মে ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
Notice: Undefined index: top-menu-onoff-sm in /home/hongkar/public_html/wp-content/themes/newsuncode/lib/part/top-part.php on line 67

আলোক ফাঁদের সুবিধায় লাভবান ভেদরগঞ্জের কৃষক

আলোক ফাঁদের সুবিধায় লাভবান ভেদরগঞ্জের কৃষক
ভেদরগঞ্জে আলোক ফাঁদ পরিদর্শন করছেন উপজেলা কৃষি অফিসার ফাতেমা ইসলাম। ছবি-দৈনিক হুংকার।

“বিজন বীলের প্রান্তে তীক্ষè আলো! পথচারীদের দৃষ্টিতে যেন রহস্য ঘনিভূত হয়। রহস্যের সন্ধানে এগুতেই চোখে পড়লো উপরে সৌর শক্তি চালিত উজ্জল আলোর বাতি, নিচে সাবান পানি ভর্তি প্লাস্টিকের গামলা। তার উপরে কীটপতঙ্গ গুলো অজানা প্রেমের টানে যেন আত্মহুতি দিচ্ছে”।
আমি এটা কোন কাব্বিক কথা বা উপন্যাসের কোন অধ্যায় পাঠ করছি না। আমি আজ আপনাদের শোনাবো ভেদরগঞ্জ উপজেলা কৃষি বিভাগের আলোক ফাঁদ বা (লাইট ট্রাফ) এর উপকারিতার কথা।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা কৃষি বিভাগ ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে উপজেলার অধিকাংশ কৃষক এখন তাদের ফসলের মাঠে আলোক ফাঁদ ব্যবহার শুরু করেছে। এর ফলে কীটনাশক এর পরিবর্তে প্রাকৃতিক উপায়ে কীটপতঙ্গ নির্মূল এর পাশাপাশি ফসল উৎপাদনে সাশ্রয়ী ভূমিক রাখতে সক্ষম হচ্ছে তারা। কৃষিকদের মতে আলোক ফাঁদ ব্যবহারের ফলে মাঠে কীটনাশক ব্যবহারের ব্যয় অর্ধেকের নীচে নেমে এসেছে। আর ফসল উৎপাদনেও ২০ ভাগ অধিক ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে।
মহিষার ইউনিয়নের সবজি চাষী মিন্টু পাঠান জানান, সরকারি ভাবে প্রাপ্ত একটি সৌর আলোক ফাঁদের পাশাপাশি আমার এলাকায় নিজস্ব অর্থায়নে আরো ৫টি আলোক ফাঁদ তৈরী করে প্রতিদিন সন্ধ্যায় আমাদের ফসলের মাঠে ব্যবহার করছি। এতে কীটপতঙ্গ গুলো ধীরে ধীরে কমে আসছে। এখন সামান্য ব্যবহার করলেই চলে। এ পদ্ধতি সারাদেশে ব্যবহৃত হলে আমরা যেমন নিরাপদ ফসল পাবো তেমনি ভাবে কীটনাশক এর ব্যবহার বহুলাংশে কমে আসবে।
একই ইউনিয়নের কৃষক জাকির হোসেন ভূইয়া জানান, তার এলাকায় এ বছরই প্রথম আলোক ফাঁদের ব্যবহার শুরু হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার ফাতেমা ইসলাম এর পরামর্শে সে নিজে বাজার থেকে চার্জার লাইট ক্রয় করে আলোক ফাঁদ তৈরী করেছেন। গামলার ভিতরে ডিটারজেন্ট মিশ্রিত পানি আর চার্জার লাইট ব্যবহার করে পোকা মাকড় নিধন করছে। এতে করে সামান্য খরচেই অধিক পোকা দমন করতে পারছে।
উপসহকারী কৃষি অফিসার মামুনুর রশিদ হাসিব বলেন, আলোক ফাঁদ একটি নিরাপদ কার্যকরী কীটপতঙ্গ দমন পদ্ধতি। এর ব্যবহারের ফলে কৃষক যেমন উপকৃত হবে তেমনি ভাবে আমাদের ফসলের জন্য উপকারী পোকা গুলোকে রক্ষা করা সম্ভব হবে। এই পদ্ধতি অবলম্বন করে কীটনাশক ব্যবহার ব্যয় বহুলাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার ফাতেমা ইসলাম বলেন, আমাদের কৃষি বিজ্ঞান এর মতে আলোক ফাঁদ ব্যবহার করে সারাদেশের কৃষক লাভবান হচ্ছে। আমাদের উপজেলায় এ বছরই আমরা ব্যাপক হারে আলোক ফাঁদ ব্যবহার শুরু করেছি। ইতিমধ্যে কৃষি বিভাগের উপসহকারী কৃষি অফিসারদের তথ্যাবধানে প্রতি বৃহস্পতিবার নিজস্ব ব্লক গুলোতে আলোক ফাঁদ ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ কাজে আমরা কৃষকদের আগ্রহী করার পাশাপাশি তাদের লাভের বিষয়টি বোঝাতে সক্ষম হওয়ায় কৃষকরা আলোক ফাঁদ ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

দৈনিক হুংকারে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।