শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, ৮ রমজান ১৪৪৪ হিজরি
শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
Notice: Undefined index: top-menu-onoff-sm in /home/hongkar/public_html/wp-content/themes/newsuncode/lib/part/top-part.php on line 67

দেশ সেবায় ব্যস্ত বাবা-মা, গৃহকর্মীর সাথে দিন কাটাচ্ছে দুই শিশু সন্তান

দুই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কন্যা সন্তানেরা বাবা-মায়ের অপেক্ষায়। ছবি-দৈনিক হুংকার।

শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহাবুর রহমান শেখ ও গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা তাসলিমা আলী। এই দম্পতির ছয় বছর বয়সী জোহানা ও চার বছর বয়সী সামান্থা নামে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। এই কন্যা শিশুদের বাবা-মা দুজনই প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন।
কোভিড-১৯ করোনা মোকাবেলা ও নিয়ন্ত্রণে এই সময়ে কর্মক্ষেত্রে তাদের দায়িত্ব অনেকগুন বেড়েছে। গরীব অসহায় কর্মহীন মানুষদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ। করোনা মোকাবেলায় সচেতনতা বৃদ্ধি করে মানুষকে ঘরমুখী রাখা। বাজারে অভিযান চালিয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ রাখা, করোনা পজেটিভদের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা এবং বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছান সহ প্রশাসনের সকল কাজ করতে হয় তাদের। ওই দুই শিশুর বাবা এপ্রিলের পর মুকসুদপুরের বাসায় যেতে পারে নাই আর মাও বাসা থেকে বেরিয়ে যায় ভোরে। মা দায়িত্ব পালন করে অনেক দিন গভীর রাতেও ফিরেন। এই অবস্থায় শিশু দুইটি বাবা-মায়ের আদর-¯েœহ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের বাসায় থাকছে শিশু সামান্থা ও জোহানা। এক কথায় বাবা ও সন্তানেরা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন রয়েছেন। আর মা তাসলিমা আলী সকালে গুরু দায়িত্ব কাধে নিয়ে বেরিয়ে যান আর ফেরেন সেই রাতে। ফলে ঘরবন্দী দুই কন্যা শিশুর সঙ্গী শুধু গৃহপরিচারিকা।
জোহানা মুকসুদপুর আইডিয়াল কেজি স্কুলে প্রথম শেণীতে পড়ে। সামান্তা এখনও স্কুলে যায় না। তারা বাবার সাথে মুঠোফোনে কথা বলার সময় বলছিল ‘অনেক দিন বাবা তোমার সাথে দেখা নাই, দাদাবাড়িও যেতে পারছি না। স্কুলও বন্ধ তাই বন্ধুদের সঙ্গেও খেলতে পারি না।’
সন্তানদের পাশে থাকতে না পারার কষ্টের কথা জানালেন মো. মাহাবুবুর রহমান শেখ ও তাসলিমা আলী। তাসলিমা বলছিলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে দায়িত্ব পালনে সব সময়ই সচেষ্ট থাকেন তিনি। তবুও সতর্কতার অংশ হিসেবে সন্তানদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হচ্ছে। রাতে বাসায় ফিরে সঙ্গে সঙ্গেই সন্তানদের কাছে যেতে পারেন না।
তাসলিমা আলী মোবাইলফোনে বলেন, আগে মেয়েদের সঙ্গে দুপুরে খাবার খেতাম। আমিই তাদের খাবার খাইয়ে দিতাম। বর্তমানে পরিস্থিতি এমন জায়গায় দাঁড়িয়েছে যে প্রিয় সন্তানদের সান্নিধ্য থেকে দূরে থাকতে হচ্ছে। এটা অনেক কষ্টের। তবে সেই কষ্ট কিছুটা কমে যায়, যখন ভাবি দুর্যোগের এই সময়ে দেশের মানুষের জন্য কাজ করছি।
মো. মাহাবুবুর রহমান শেখ বলেন, শরীয়তপুর থেকে মুকসুদপুরের দূরত্ব ১৫০ কিলোমিটার। সন্তান ও পরিবারের কথা ভাবলে মন খারাপ হয়। কিন্তু এ দুর্যোগে আবেগকে নিয়ন্ত্রণে রেখে কাজ করতে হচ্ছে। সন্তানেরা বাসায় নিরাপদে আছে, এটা ভেবে স্বস্তিতে থাকি। উল্টো সন্তানরা বারবার ফোন করে আমার খোঁজখবর নেয়। বারবার হাত ধুচ্ছি কি না, এখন কি করছি, খেয়েছি কিনা এমন নানা প্রশ্ন করে। তখন মনে হয় দূরে থাকলেও সন্তানদের কাছেই আছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

দৈনিক হুংকারে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।